কোর্সটি গতবছর প্রথমবার করেছিলাম। কোর্সে আলোচিত বিষয়বস্তু এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, আমার মনে হয়েছে গতবার তার হক আদায় করতে পারিনি। তাই এ বছর পুনরায় কোর্সে ভর্তি হয়েছি।
আলহামদুলিল্লাহ এবার অনেকটা ভালভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছি। সুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।
.
অন্যান্য ভাই-বোনদের প্রতি,
“আপনারা অবশ্যই এই কোর্সটি করুন। তাতে বর্তমান পৃথিবীতে চলমান সকল ঘটনাবলির স্পষ্ট ধারণা আপনার সামনে প্রস্ফুটিত হবে। জানতে পারবেন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আপনার করনীয় কী?
.
আর যেসব দ্বীনী ভাই-বোনেরা বলেন, “আমরা দ্বীনের জন্য কাজ করতে চাই, কিন্তু কীভাবে কী করব বুঝে উঠতে পারছিনা!”
—তাহলে এই কোর্সটি আপনার জন্যই।
.
আর আগামী বছর আমি নিজে অন্তত ১০০ ভাই-বোনকে এই কোর্সটির দাওয়াত পৌঁছিয়ে দিব। ইনশাআল্লাহ

লাস্ট দারস টা যখন শেষ করলাম,আমার চোখ ভিজে গিয়েছিল। কত কিছু যে নতুন ভাবে জানলাম, বুঝলাম।এই বুঝতে পারা অন্তরে এক অস্থিরতার জন্ম দিল যা আগে ছিল না যা থাকা উচিৎ একজন মুসলিমের। এই কোর্স শুধু একটা এক্সাম দেয়া পাশ করা সার্টিফিকেট নেয়ার কোর্স না, এটা মুসলিম হিসেবে এই বর্তমান দুনিয়ায় আমার অবস্থান,কর্তব্য মনে করিয়ে দেয়ার এক উত্তম রিমাইন্ডার। মুহতারাম ইন্সট্রাক্টর এত পরিমাণ শ্রম দিয়েছেন,আর আমার মত কিছুই না জানা মানুষের জন্যেও এতটা সহজ ভাবে বর্ণনা করেছেন তার জন্য অনেক অনেক দুয়া রইলো। আল্লাহ ইল্মওয়েব স্কুল ও এর সাথে নিয়োজিত সকলকে কবুল করুন।

ওয়ার্ল্ডভিউ'র উপর ভিত্তি করে মানুষ পৃথিবীকে দেখে। নির্দিষ্ট দৃষ্টিকোণই ব্যক্তিকে জগতের সব বিষয়ে ঐ নির্দিষ্ট অবস্থান থেকে দেখতে শেখায়। এর উপর ভিত্তি করেই সে চিন্তা করে, সিদ্ধান্ত নেয় এবং কাজ করে। বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ পশ্চিমের 'আধুনিকতা'য় মুগ্ধ। কেউ জেনে বুঝে, কেউ না বুঝে পশ্চিমের ছাঁচে 'আধুনিক মানুষ' হতে উদগ্রীব। অথচ, মুসলিম হিসেবে তো বটেই, মানুষ হিসেবেও আমাদের উচিত পৃথিবীর সত্যিকার বাস্তবতা বুঝে ফিতরাতের উপর, দ্বীনে হকের দিকেই ফিরে আসা, এর উপর টিকে থাকা।

'পাশ্চাত্যবাদ ও চিন্তাবিনির্মাণ' কোর্সে পশ্চিমের তথাকথিত আধুনিকতার মানদন্ডকে নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আধুনিক এই জাহিলিয়্যাতের বীজ, শেকড় বিস্তারের ইতিহাস এবং এর জঘন্য কালো বাস্তবতা তুলে ধরা হয়েছে। তাত্ত্বিকতার বিচারে এবং প্রায়োগিক ক্ষেত্রে এর ব্যর্থতা পরতে পরতে খুলে খুলে দেখানো হয়েছে। এবং এতো কিছু সত্তেও পৃথিবীর মানুষ কেন এর পেছনে ছুটছে সেসব নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। আলোচনায় এসেছে আধুনিক মানবের সমস্যার বিপরীতে ইসলামের শাশ্বত সমাধান। *ওদের* নানা বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের মোকাবেলায় কীভাবে 'খেলতে' হয় সেই কৌশল শিখতে পারবেন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, ইসলামী বিশ্বাসের অবস্থান থেকে 'কীভাবে চিন্তা করতে হয়?' -এর দীক্ষা পাবেন। সর্বোপরি, ইসলামের দৃষ্টিতে জীবনকে, জীবনের সব কিছুকে দেখার জরুরী বিষয়টা শিখবেন।

মুদাররিস মুহতারাম আসিফ আদনান ভাই ২০১৩তে দ্বীনে ফিরেই উগ্র নাস্তিকদের বুদ্ধিবৃত্তিক আঘাতের বিপরীতে যে দৃঢ়তার সাথে লড়েছেন, সেই ধারাবাহিকতায় আধুনিকতার সফট নাস্তিকতাকেও ঘায়েল করেছেন সফলভাবেই। আলহামদুলিল্লাহ। যেকোনো সমস্যা সমাধানের আগে সমস্যা চিহ্নিত করতে হয়। ইসলামের সোনালি সমাজ ফিরিয়ে আনার লড়াইয়ে পশ্চিমা আধুনিকতা একটি বড় সমস্যা। এর সমাধানে একজন বুদ্ধিবৃত্তিক যোদ্ধা হয়ে উঠতে কোর্সটা সহায়ক হবে, ইনিশাআল্লাহ।

Alhamdulillah for everything.

কিয়ামত পর্যন্ত ইসলামের লড়াই চলবে সমস্ত বাতিল আকিদাহ, কাজকর্ম, কর্মপন্থা, সংস্কৃতি ইত্যাদি সমস্তকিছুর বিরুদ্ধে। কিন্তু এ বাতিল ও ধ্বংসপ্রাপ্ত পথে কি শুধু স্বেচ্ছায় ও জেনেবুঝে বাতিলের অনুসরণ করা ব্যক্তিরাই থাকবে? যদি এমনই হতো, তবে কেন রসূলুল্লহ সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই সাড়ে চৌদ্দশ বছর পূর্বেই আমাদেরকে, তাঁর প্রাণপ্রিয় উম্মাতকে সতর্ক করে জানিয়ে গেলেন যে, "(একটা সময় আসবে যখন) কেউ সকালে মুমিন থাকলে বিকেলে সে কাফির হয়ে যাবে, আবার বিকেলে মুমিন থাকলে সকালে সে কাফির হয়ে যাবে।" [সহিহ মুসলিম: ২১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন]
ব্যাপারটা কি এমন যে সবাই জেনেবুঝে ইচ্ছেমতো যখন ইচ্ছা মুমিন হবে, আবার যখন ইচ্ছা কুফর-শিরকে লিপ্ত হয়ে যাবে? কখনোই না। বরং, অধিকাংশ মানুষ শুধুমাত্র কুফর না চেনার কারণে, ঈমান ও ইসলাম না চেনার কারণে এক বেলা ইসলাম মেনে চললেও পরের বেলা আসতে না আসতেই সে কুফর-শিরক তথা বাতিলে জড়িয়ে পড়বে, অথচ সে বুঝতেও পারবে না সে কোন মহাধ্বংসের নিকষ কালো মহাসাগরে ঝাঁপ দিয়েছে, যার অতল গভীরে শুধু ধ্বংস, ক্ষতি এবং অকল্যাণপূর্ণ পরিণতি বিরাজমান।

বুঝবেই বা কী করে? যে পথিক সঠিক পথ এবং ভুল পথ চেনে, পুরোপুরি না চিনলেও সঠিক এবং ভুল উভয় পথ সম্পর্কে নূন্যতম ধারণাটা রাখে, সে না হয় পথ চলার সময় একটু পরপর নিজের পথ যাচাই করে নেবে, কঠিন হলেও যেভাবেই হোক যাচাই করে নেয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু যে পথিক এটাই জানে না যে তার চলার পথে থাকা অসংখ্য রাস্তার মধ্যে মাত্র একটি রাস্তা সঠিক, ফলে সে সামনে পাওয়া, বিশেষ করে বেশি জনপ্রিয় বা অধিক জনবহুল সমস্ত পথকেই নিজের গন্তব্যে পৌঁছার রাস্তা বলে মনে করে, সে কি চলার পথে একটিবারের জন্যেও পথ যাচাই করবে? না। বরং, সে গন্তব্যে পৌঁছার আশা এবং বিশ্বাস নিয়ে জীবনভর পথ চলতেই থাকবে, চলতেই থাকবে; এভাবেই তার জীবনবাতির আলোটি নির্দিষ্ট সময়ে এসে নিভে যাবে ঠিক এমন অবস্থায় যখন সে তার গন্তব্য থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান করছে!

আর এই পথিকের চেয়েও করুণ অবস্থা তো সেই পথিকের, যে নিজের গন্তব্যই চেনে না, জানে না। পূর্বের পথিকটির মনে তো তবুও গন্তব্যে পৌঁছানোর আশা নিভু নিভু করে হলেও জ্বলছিল, কিন্তু এই পথিকটি তো বিভ্রান্তের মতো, উন্মাদের মতো সারাজীবন ছুটেই চলবে। পূর্বের পথিকটি গন্তব্য সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও ভুল পথে চলার কারণে যদি গন্তব্য থেকে এত দূরে চলে যেতে পারে, তবে গন্তব্য সম্পর্কে বেখবর পথিকটির কী করুণ দশা, কী করুণ পরিণতি হতে পারে তা কি আঁচ করা খুব কঠিন হবে?

চিরকৃতজ্ঞতা উস্তাদ মুহতারাম এবং ইলমওয়েব কর্তৃপক্ষের প্রতি। جزاهم الله خيرا كثيرا في الدنيا والآخرة

কোর্সটিতে গন্তব্য ও পথ সম্পর্কে জানে, কিংবা গন্তব্য সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও পথ চেনে না, কিংবা গন্তব্য ও পথ - উভয়টি সম্পর্কেই পুরোপুরি বেখবর - সকল প্রকার মুসলিমের জন্যই পাথেয় মজুদ আছে বলে বিশ্বাস করি। ঈমান ও ইসলামী আকিদাহ সংশোধনসংক্রান্ত নানান মাধ্যম হাতের নাগালে পাওয়া গেলেও ভুল আকিদাহ চেনানোর কোনো উপায় বা মাধ্যম অন্তত আমি কখনো দেখিনি। এই কোর্সে মূলত বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বিস্তৃত বাতিল আকিদাহর আদ্যোপান্তই জানানো হবে, চেনানো হবে।

আমার সক্ষমতা থাকলে ইনশাআল্লাহ পরিচিত-অপরিচিত সমস্ত মুসলিমকে এই কোর্সটিতে এনরোল করাতাম, প্রয়োজনে কোর্স ফি-টাও আমি নিজেই দিয়ে দিতাম ইনশাআল্লাহ।
কিন্তু সেই সক্ষমতা যেহেতু নেই, তাই আপনারা যারা কোর্সটি করেননি তাদের প্রত্যেককে কোর্সটি করার জন্য সবিশেষ অনুরোধ করছি। কেন অনুরোধ করছি? নিজের এবং প্রতিটি মুসলিমের তথা এককথায় মুসলিম উম্মাহর ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার পাশাপাশি দ্বীনের খেদমত করার(অন্তত নিজের পরিবার ও সন্তানদের মধ্যে হলেও) অমূল্য রত্নভান্ডার এখানে খুঁজে পাবেন ইনশাআল্লাহ।

কোর্সটির গুরুত্ব ঠিক কত কত বেশি, তা লিখে কিংবা বলে বোঝানো আসলেই সম্ভব না। এটি মোটেও অত্যুক্তি নয় এবং আমি বিন্দুমাত্রও বাড়িয়ে বলছি না। যে দৃষ্টিশক্তি পেয়েছে, দেখার স্বাদ পেয়েছে, সে কি শুধু মুখে বলার মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তিহীন কিংবা অন্ধকার ঘরে বন্দী থাকা ব্যক্তিকে দেখার স্বাদ, দেখতে পাওয়ার সৌন্দর্য ও সৌভাগ্য অনুভব করাতে সক্ষম হবে?